আশ্চর্য এক পদার্থ “গ্রাফিন” নিয়ে কিছু কথা !

গ্রাফিন হচ্ছে একটি এক পরমাণু পাতলা পদার্থ যেটি বিজ্ঞানীরা ২০০৪ সালে আবিষ্কার করেছিলো। বর্তমানে বুলেটপ্রুফ উপাদান হিসেবেও গ্রাফিন ব্যাবহার করা হচ্ছে। এটি এখন পর্যন্ত আবিষ্কৃত কঠিন পদার্থ যেমন পলিএমাইড এবং ইস্পাতের তুলনায় অধিক কার্যকর। অন্যান্য যেকোনো কঠিন পদার্থ যেমন ইস্পাতের তুলনায় ১০ গুন পর্যন্ত বেশী আঘাত সহ্য করতে পারে। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের এক গবেষণায় এমন তথ্য পাওয়া গেছে। প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেছে সায়েন্স সাময়িকীত।
গ্রাফিন
গ্রাফিন আসলে কার্বনের আরেকটি রূপভেদ। এটি অত্যন্ত পাতলা, সরু এবং স্বচ্ছ পাতের মতো যার ফলে এটি খুব সহজে তাপ ও বিদ্যুৎ পরিবহন করতে পারে। এবং এটির গঠন একক পরমাণুর বিন্যাসে তৈরি মৌচাকের মতো।
যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞ জে হওয়াং লি ও তার সহযোগীরা লেজার ব্যবহার করে সিলিকার তৈরি সূক্ষ্ম বুলেট পর্যবেক্ষণ করেন, যেগুলো গ্রাফিনের ১০ থেকে ১০০ স্তরের পাত ভেদ করেছিল। বুলেটবিদ্ধ হওয়ার আগে ও পরে গ্রাফিন গতিশক্তির স্তরগুলো তুলনা করে দেখেন তারা। ইলেকট্রন মাইক্রোস্কোপ যন্ত্রের সাহায্যে দেখা যায়, গ্রাফিন আঘাত পাওয়ার পর কোনাকুনিভাবে প্রসারিত হয়ে বিভিন্ন দিকে শক্তি ছড়িয়ে দেয়। ছোট পরিসরে ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে মারার পরীক্ষা চালিয়ে গ্রাফিনের অসাধারণ শক্তি, নমনীয়তা ও কাঠিন্য দেখা যায়।
গ্রাফিন
গবেশনার ফলাফল দেখে বিজ্ঞানীরা মুগ্ধ হয়েছে এবং তাঁরা যথেষ্ট আশাবাদী যে ভবিষ্যতে গ্রাফিন তথা এই সরু,  শক্তিশালী,  নমনীয় এবং বিদ্যুৎ পরিবাহী পদার্থ ব্যবহার করে ইলেকট্রনিকস ও অন্যান্য প্রযুক্তিতে বড় ধরনের পরিবর্তন আনা যাবে এবং ইতিমধ্যে এই প্রোজেক্ট নিয়ে কাজও শুরু হয়ে গেছে। বিজ্ঞানীরা নিশ্চিত করে বলেছেন যে ২০১৫ সালের ভেতরে গ্রাফিনের ব্যাবহার শুরু করা হবে। এবং প্রাথমিক পর্যায়ে এটি ইলেক্ট্রনিক্স সামগ্রীতে ব্যাবহার করার চেষ্টা চলছে।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

গুরুত্বপুর্ন মৌলের নাম, প্রতীক, যোজনী, পারমাণবিক সংখ্যা ও আপেক্ষিক ভর

রক্ত কণিকার কাজ কী

তাপহারী বিক্রিয়া কাকে বলে,