নেলসন ম্যান্ডেলা

নেলসন ম্যান্ডেলা

আফ্রিকার গ্রামগুলোতে যে শিশুরা জন্মগ্রহন করে মাত্র পাঁচ বছর বয়সে তাদের রাখালের দায়িত্ব নিতে হয়। সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত সময়টা তাদের কাটে ভেড়া আর গরুর পেছনে। সময়টা তারা কাটায় খেলাধূলা করে, নদীতে সাঁতার কেটে, মাছ ধরে, পাহাড়ের উঠে, কোনো গাছের ডালে মৌচাক ভেঙ্গে অথবা নিজেরা নিজেরা মারামারি করে! এমনই এক শিশুর দল একদিন দুপুরে একটা মজার খেলা বের করলো। খেলাটা হলো একটা গাধার পিঠে উঠতে হবে এবং তাকে গোটা মাঠ কোনা ঘেষে ঘুরিয়ে আনতে হবে। একে একে সবাই গাধার পিঠে উঠলো । সবশেষ ছেলেটা গাধার পিঠে উঠেই গাধাকে আঘাত করলো সামনে এগোবার জন্য।
গাধাটা এত পরিশ্রমের কারনে বিরক্ত আর ক্লান্ত হয়ে পরেছিল বোধহয়। সে এদিক ওদিক যেতে লাগলো আর শেষে একটা কাঁটার ঝোপে গিয়ে ছেলেটিকে ফেলেই দিলো। হাতে পিঠে মুখে কাঁটার দাগ নিয়ে ছেলেটা যখন উঠে দাড়ালো তখন তার লজ্জার সীমা রইলো না। অন্যান্য ছেলেরা তাকে দেখে হাসতেই লাগলো। আফ্রিকানদের আত্মসম্মান বোধ প্রচুর। গাধার পিঠ থেকে বন্ধুদের সামনে পড়ে যাওয়াটা আসলেই ভীষন লজ্জার ব্যাপার। এই লজ্জার কাছে হাত পায়ে পাওয়া আঘাতও কিছুই না।
অনেক বছর পর ছেলেটা তার জীবনীতে ঘটণাটা শেয়ার করলো। লিখেলো যে সেদিনের সেই গাধাটি তার জীবনে অনেক বড় শিক্ষাটি দিয়েছিল। সে বুঝতে পেরেছিল কাউকে ছোট করতে গেলে নিজেকেই ছোট হতে হয়। কাউকে খেলার ছলে হলেও লজ্জায় ফেললে নিজেকেই লজ্জায় পড়তে হয়। নিজের শত্রুকেও সম্মানের চোখে দেখার শিক্ষাও সে এই ঘটনা থেকেই পেয়েছিল। এরকম যার বিচার, সেই কালো ছেলেটাই যে পরবর্তীতে গোটা আফ্রিকায় কালোদের স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠায় নেতৃত্ব দেবে এটাই তো স্বাভাবিক। ঠিক ধরেছেন, সেই কালো ছেলেটারই নাম নেলসন ম্যান্ডেলা।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

গুরুত্বপুর্ন মৌলের নাম, প্রতীক, যোজনী, পারমাণবিক সংখ্যা ও আপেক্ষিক ভর

রক্ত কণিকার কাজ কী

তাপহারী বিক্রিয়া কাকে বলে,